relief for flood affected people
করোনা মহামারিতে পুরো বিশ্ব যখন থমকে আছে, তখন দেশে বন্যার আগমন এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিকে আরেক নতুন মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। এই বছর বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন। বন্যাদুর্গত এলাকায় খাদ্যসঙ্কট, গবাদী পশুর খাদ্যাভাব, ঘরবাড়ি,চাষের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়া ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত দেশের বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষজন।
সবসময় যেকোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের সেবায় সদা প্রস্তুত এবং নিজেদের যথাসাধ্য চেষ্টা করা, বাংলাদেশ স্কাউটস, ঢাকা জেলা রোভারের অন্যতম সক্রিয় মুক্ত দল, "আমরা স্কাউট গ্রুপ, ঢাকা" গত ১৬ আগস্ট ''সেবার লক্ষ্যে এগিয়ে যাই, বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই '' এই শ্লোগান নিয়ে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে। মাত্র কয়েকদিনের প্রচেষ্টায় আমরা মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেংরই ১নং ওয়ার্ড, ছোট বারইল এবং পাঁছ বারইল চর এলাকায় সর্বমোট ১২১টি বন্যা কবলিত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে সক্ষম হই।
ট্রলারে করে ৩টি চর এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে যাওয়ার সময় কখনো সূর্যের প্রখর তাপ আবার কখনো ঝিরিঝিরি বৃষ্টির আবহাওয়া যেন পুরো যাত্রাপথকে আরো রোমাঞ্চকর করে তুলেছিল। ট্রলারের শব্দ কিংবা দূর থেকে দেখা পেলেই নদীর পাড়ে বাচ্চা-বুড়ো, পুরুষ-মহিলা সবাই ছু্ঁটে আসতো, তারা আরো কয়েকদিন ভালো মন্দ খেয়ে বেঁচে থাকবে সেই আশায় আর কৃতজ্ঞতায়ই বুঝি তাদের চোখ ছলছল করে উঠতো।
আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেস্টা করেছি যাতে বন্যা কবলিত এই অসহায় মানুষগুলোর মুখে কিছুটা হলেও হাঁসি ফোটাতে পারি। তাই আমরা প্রতিটি পরিবারকে ১/ চাল, ২/ ডাল, ৩/ আলু, ৪/ স্যালাইন, ৫/ পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি, ৬/ কৃমি নাশক ট্যাবলেট, ৭/ নাপা রেগুলার, ৮/ পটাসিয়াম ট্যাবলেট, ৯/ ফেস মাস্ক, ১০/ স্যানিটাইজার, ১১/ চিঁড়া, ১২/ সাবান, ১৩/ টোস্ট বিস্কুট, ১৪/ স্যানিটারি ন্যাপকিন (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), ১৫/ ছোট বাচ্চাদের জন্য চিপস, চকলেট, ওয়েফার দিয়েছি। এই সামান্য ত্রাণ পেয়ে তারা যেভাবে আমাদের দো'আ দিচ্ছিলো, তাদের মনের কষ্ট এতো আপনভাবে বলছিলো আর সবশেষে মিষ্টি হাঁসি দিয়ে যেভাবে আপন নীড়ে ফিরে যাচ্ছিলো সেই অনুভূতি আসলে লাখ-কোটি টাকা দিয়েও পাওয়া অসম্ভব বলে আমার বিশ্বাস।