Profile picture for user ArkanRian_1
Bangladesh

An idea for making a green world

আজ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, বিশ্ব শান্তি দিবস। সবুজ পৃথিবীই শান্তি, এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বাড়ির আশেপাশে চারাগাছ রোপণ ও এর পরিচর্যা। আজ এই বিশ্ব শান্তি দিবসে বাড়ির আঙ্গিনায় একটি ঔষধী(বাষক) চারাগাছ রোপণ করি। আদি যুগ থেকেই বাসক পাতা ভেষজ গুণে গুণান্বিত। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায়ও বাসকের ভেষজ গুণাবলি প্রমাণিত হয়েছে। তাজা অথবা শুকনো পাতা বহু রোগে ওষুধের কাজ করে। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা করে দেয় বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহমূলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারী। আমাদের দেশে অনেক জায়গায় বাসক গাছ বাণিজ্যকভাবে চাষ করা হচ্ছে। এর পাতা অর্থাৎ বাসক পাতা ওষুধ কোম্পানিগুলো কিনে থাকে। এ থেকে বোঝা যায় এই পাতার কত ঔষধী গুণ। দেহের বিভিন্ন রোগ ছাড়াও পানির জীবাণু মুক্ত করতে, হাত-পা ফুলে গেলে, চামড়ার রং উজ্জ্বল করতেও এ গাছের উপকারিতা অনেক। বাসক একটি ভারত উপমহাদেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম আড়াটোডা বাসিকা। ভারত উপমহাদেশের প্রায় সর্বত্র এটি জন্মে। হিন্দিতে একে বলা হয় আডুসা, বানসা অথবা ভাসিকা। তবে সংস্কৃত নামের ভিত্তিতে এটির ব্যবসায়িক নাম ‘বাসক’। আর্দ্র, সমতলভূমিতে এটি বেশি জন্মে। লোকালয়ের কাছেই জন্মে বেশি। গাছটি লম্বায় ১-১৫ মিটার (৩-৫ ফুট) পর্যন্ত হয়। কচি অবস্থায় গাছের গোড়া সবুজ হলেও পরিণত অবস্থায় হাল্কা বেগুনি রঙের মতো দেখায়। পাতাগুলো লম্বায় ৫-১২ সেন্টিমিটারের মতো হয়। ফুল সাদা রঙের এবং গুচ্ছাকারে ফোটে। ফলগুলো সুপারি আকৃতির এবং বীজে ভরা। বাসক পাতার উপকারিতাঃ ১. বাসক পাতার ১-২ চামচ রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিলিয়ে খেলে শিশুর সর্দি-কাশির উপকার পাওয়া যায়। ২. এই পাতার রস গোসলের আধা ঘণ্টা আগে মাথায় মাখলে উকুন মরে যায়। এছাড়া আমবাত ও ফোঁড়ার প্রাথমিক অবস্থায় বাসক পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা কমে যায়। ৩. বুকে কফ এবং এর জন্য শ্বাসকষ্ট হয় বা কাশি হয় তখন বাসক পাতার রস ১-২ চামচ মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে। ৪. প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রণা থাকলে বাসকের ফুল বেটে ২-৩ চামচ এবং মিছরি মিলিয়ে সরবত করে খেলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়। ৫. জ্বর হলে বা অল্প জ্বর থাকলে বাসকের মূল ৫-১০ গ্রাম ধুয়ে থেঁতো করে ১০০ মিলিলিটার পানিতে ফুটিয়ে ২৫ মিলিলিটার থাকতে নামিয়ে তা ছেঁকে নিন। এরপর দিনে ২ বার করে খাবেন। তাতে জ্বর এবং কাশি দুটোই চলে যাবে। ৬. বাসকের কচিপাতা ১০-১২টি ও এক টুকরো হলুদ এক সঙ্গে বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগালে কয়েক দিনের মধ্যে তা সেরে যায়। ৭. বাসক পাতা বা ফুলের রস ১-২ চামচ মধু বা চিনিসহ প্রতিদিন খেলে জন্ডিস রেগে উপকার পাওয়া যায়। ৮. পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে ২০টি বাসক পাতা থেঁতিয়ে ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে উষ্ণ অবস্থায় কুলকুচি করলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়। ৯. যাদের হাঁপানির টান আছে তারা বাসক পাতা শুকনো করে, ওই পাতা বিড়ি বা চুরুটের মতো পাকিয়ে, তার সাহায্যে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট প্রশমিত হয়। ১০. যাদের গায়ে ঘামের গন্ধ হয় তারা বাসক পাতার রস গায়ে লাগালে দুর্গন্ধ দূর হবে। ১১. বাসক পাতার রস ও শঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে রঙ ফর্সা হবে। ১২. এক কলসি পানিতে তিন-চারটি বাসক পাতা ফেলে তিন-চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। এরপর ব্যবহার করতে পারেন। ১৩. বাসক পাতার রস নিয়মিত খেলে খিঁচুনি রোগ দূর হয়ে যায়। এছাড়া বাসকের পাতা সবুজ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং পাতা থেকে হলদে রং পাওয়া যায়। বাসক পাতায় এমন কিছু ক্ষারীয় পদার্থ আছে যায় ফলে ছত্রাক জন্মায় না এবং পোকামাকড় ধরে না বলে ফল প্যাকিং এবং সংরক্ষণ করার কাজেও ব্যবহৃত হয়।
Number of participants
1
Service hours
1
Topics
Youth Programme
Youth Engagement
Legacy BWF

Share via

Share